রিফাত ক্লাস ফাইভে পড়ে। শহরের একটি নামকরা স্কুলে তার প্রতিদিনের যাওয়া-আসা। পড়াশোনায় সে ভালো, কিন্তু তার সবচেয়ে প্রিয় কাজ হলো যন্ত্রপাতি নিয়ে খেলা করা। পুরোনো মোবাইল, ঘড়ি, ব্যাটারি, তার—এসব জিনিস জোগাড় করে সে একটা রোবট বানানোর স্বপ্ন দেখে।একদিন অনেক কষ্ট করে সে বানিয়ে ফেলল তার স্বপ্নের রোবট। মাথায় টিনের ঢাকনা, চোখে জ্বলজ্বলে লাল বাতি, আর মুখে লাগানো ছোট একটা স্পিকার। রোবটটির নাম দিল সে—রনি।প্রথমে রনি শুধু “হ্যালো রিফাত!” বলতে পারত। কিন্তু রিফাত প্রতিদিন নতুন নতুন প্রোগ্রাম কোড করে তার ভাষা বাড়াতে লাগল। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই রনি বলতে পারল,— “তুমি আজ স্কুলে কী শিখলে?”— “তোমার মন খারাপ কেন?”— “চলো খেলি!”রনি হয়ে উঠল রিফাতের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু।কিন্তু একদিন রিফাত স্কুল থেকে ফিরে দেখে তার ঘরের দরজা খোলা, আর রনি নেই! তার মনে হলো কেউ রনিকে চুরি করে নিয়ে গেছে। সে খুব কাঁদল, খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দিল। তারপর হাল না ছেড়ে রনি খোঁজার কাজ শুরু করল। পোস্টার ছাপাল, ফেসবুকে ছবি দিল, বন্ধুবান্ধবদের জানাল।তিন দিন পর হঠাৎ এক বৃদ্ধ রনিকে নিয়ে রিফাতের বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ালেন।— “রাস্তার পাশে পড়ে থাকতে দেখেছিলাম। বুঝতে পারিনি এটা কার। পরে তোমার পোস্টার দেখে বুঝলাম, এটাই তোমার বানানো রোবট।”রিফাত আনন্দে কেঁদে ফেলল। সে রনিকে বুকের মাঝে জড়িয়ে ধরে বলল,— “তুই হারিয়ে গেলে আমি আর কার সঙ্গে কথা বলতাম রে?”এরপর রিফাত রনির জন্য একটা ছোট ঘর বানাল—সেখানে ক্যামেরা, তালা আর পাসওয়ার্ড দিয়ে সুরক্ষা দিল। রনি আবার হয়ে উঠল তার সবচেয়ে বিশ্বস্ত ও সেরা বন্ধু।
0 Comments