আজ অদ্ভুদ একটি ঘটনা ঘটলো। রাস্তায় দাড়িয়ে ছিলাম কোথাও যাওযার জন্য সি এন জির অপেক্ষায়। হঠাং একটি প্রাইভেটকার এসে থামলো আমার সামনে। কার থেকে নেমে এল পোষাকধারী এক পুলিশ। আমার সামনে এসে আমাকে ধমক দিয়ে বলল গাড়িতে উঠুন। আমি কাপা গলায বললাম কেন? সে বলল লগডাউনে বের হয়েছেন কেন? আমি কারন বলতে যাব এমন সময় সে আবার ধমক দিয়ে বলল কোন কথা নয়, গাড়িতে উঠুন৷ নইলে খুব খারাপ হবে। আমি কিছুটা ভয় পেলাম। আমার চেয়েও বেশি ভয় পেল আমার সাথে দাড়িয়ে থাকা মানুষগুলো। যাই হোক আমি গাড়িতে গিয়ে বসলাম। সামনের পাশাপাশি দুটি সীটের একটিতে একজন মহিলা বসা ছিল তাই আমি পিছনের একটি সীটে বসলাম। পুলিশটিও গিয়ে মহিলার পাশে বসলো। গাড়িতে ড্রাইভার সহ আমরা চারজন। পুলিশটির ড্রেসে নেমপ্লেট ছিলনা। তবে বেজ দেখে মনে হল বড়কর্মকর্তা। গাড়ি চলছে। পুলিশটি ধমকের স্বরে আমায় আবার প্রশ্ন করলো কোথায় যাবেন? আমি বললাম শাহবাগ। আবার ধমক কেন? বইমেলায়। ওকে বলে পাশের মহিলার দিকে চেয়ে মুচকি হাসলেন। মহিলাটি কিন্তুু হাসলেন না গম্ভীর হয়ে রইলেন। আমি এদের কাউকে চিনিনা তাই চুপ করে রইলাম। গাড়ি শাহবাগ এসে থামলো।ড্রাইভার নেমে এসে দরজা খুলে দিল। পুলিশ লোকটি আমাকে বলল যান, ভাল থাকবেন। আমি গাড়ি থেকে নামতেই লোকটি আমার মোবাইল নাম্বার চাইলো আমি দিলাম। আমি আর কোন কথা বলার আগেই তিনি ইশারা করতেই ড্রাইভার সাই করে গাড়ি নিয়ে চলে গেলেন। আমি অবাক হয়ে কিছুক্ষন দাড়িয়ে রইলাম আর ভাবতে থাকলাম কেন তারা এমন করলেন। তারপর কাকতালিও ভেবে ডুকে গেলাম বইমেলায়। রাতে মোবাইলে অপরিচিত নাম্বার থেকে একটা কল এল। আমি রিসিভ করতেই ভরাট মেয়েলি কন্ঠে বল আবারও আমার কাছে ঋনী হয়ে গেলেন। এই নিয়ে তিনবার। আমি বললাম কি ভাবে! আমি তো আপনাকে চিনিই না। মহিলাটি বলল আজ, ১৯৯১ একবার এবং ১৯৯৫ সালে একবার। এবার মনে করতে চেষ্টা করুন। আর হা আপনি আমাকে চিনেননা এটা ঠিক তবে আগে দুবার আর আজ মোট তিনবার আমায় দেখেছেন। আর একটি কথা পুলিশ লোকটি আমার স্বামী। আমরা খুব ভাল বন্ধুও। আপনাকে আমার ভাল লাগে এবং আপনার কথা সব তাকে বলেছি। তাই তিনি আপনার সাথে দুষ্টামির নামে আপনাকে লিফট দিয়েছে তাও আবার আমাকে খুশি করতে। আমি বললাম আপনি আসলে কে? একত্রিশ বছর ধরে আমার পিছে পড়ে আছেন অথচ ধরা দেননি। অন্তত আজ আপনার পরিচয় ও উদ্দেশ্য কি বলুন! ওপাশ থেকে উত্তর এল আমার পরিচয় নাইবা জানলেন। জানবেনও না কোন দিন। এমনি করে পাশে পাবেন কোন কোন সময়ে তবে বুঝতে পারবেননা এটা আমার ভাললাগা না অবহেলা। তবে মনে করিয়ে দেই, ১৯৯১ সালে ঝড় বৃষ্টির দিনে এস এসসি পরীক্ষার সময় আপনি বৃষ্টিতে রাস্তার পাশে দাড়িয়ে ছিলেন। কোন যানবাহন পাচ্ছিলেন না, আমার রিকসায় আপনাকে লিফট দিয়েছিলাম। সেদিন আমাদের সাথে কোন কথা হয়নি। তারপর ১৯৯৫ সালে পরীক্ষার হলে ক্যালকুলেটর ভুল করে নিয়ে যাননি ফলে হিসাব বিজ্ঞানের অংকগুলো মিলাতে পারছিলেননা, তখন প্রফেসার স্যার আপনাকে একটি ক্যালকুলেটর দিঢে ছিল। সেটাও আমি পাঠিয়ে ছিলাম। আমি এবার বললাম কি কারনে আপনি আমার পিছনে পড়ে রয়েছেন? সে ঠাস করে বলল,, ভাললাগা আবার অবহেলাও বটে। কল কেটে দিল। তার মোবাইল নাম্বারও সেই থেকে বন্ধ। যাই হোক তার অবহেলা আর আমার ব্যর্থতা দুই এ মিলে যেন আমার ভাবনায় অন্য এক প্রেমের ধারা। যা হারিয়ে গিয়েও ফিরে আসে কিন্তুু পূর্নতা নেই।
0 Comments