ভুতের সাথে হাডুডু

তাজপুর—ু ছোট, ছিমছাম গ্রাম। দিনভর শান্ত, কিন্তু রাত নামলেই এক অদ্ভুত নিস্তব্ধতা গ্রামটিকে গ্রাস করে। গ্রামের পাশেই পুরনো এক শ্মশানঘাট, যেটাকে ঘিরে বহু পুরনো কাহিনি ছড়িয়ে আছে। গ্রামের লোকেরা বলে, এই শ্মশানে মাঝরাতে নাকি ভূতের দল হাডুডু খেলে!এক সন্ধ্যায় গ্রামের সবচেয়ে দুর্ধর্ষ আর দুষ্টু ছেলে রফি ঘোষণা করল, “আমি খেলব ভূতের সাথে। যদি ভূত থাকে, তো আজ রাতেই দেখা হোক!”বয়োজ্যেষ্ঠরা নিরুত্তর। তারা জানে, এই খেলা খেলোয়াড় চায়, জয় নয়।রফি রাত বারোটায় একা গেল শ্মশানঘাটে। চাঁদের আলো নেই, গা ছমছমে অন্ধকার। সে দাগ টেনে দাঁড়ালো, ডেকে উঠল—“ভূতেরা, আয়! আমি এসেছি খেলতে!”এক মুহূর্ত নিস্তব্ধতা। তারপর হঠাৎ বাতাস ভারী হয়ে উঠল, কুয়াশা নেমে এল। মাঠের ওপারে ছায়াময় কয়েকটি অবয়ব ধীরে ধীরে এগিয়ে এলো। কেউ পা টেনে টেনে চলছে, কারও চোখ দুটো লাল জ্বলছে, আবার কেউ হাসছে ভয়ানকভাবে।হাডুডু শুরু হল—রফি ‘হাডুডু হাডুডু’ করতে করতে ছায়াদের দিকে এগোতে লাগল। ভূতেরাও তাদের ভয়ংকর ছন্দে খেলে উঠল। সময় গড়াতে লাগল, রাত বাড়তে থাকল।ঠিক তিনটার সময়, এক চিমটি মুখওয়ালা বুড়ো ভূত এসে বলল,“মানুষ-ছেলে, সাহস তো তোর অনেক, কিন্তু ভূতের সাথে খেললে কিছু রেখে যেতে হয়!”এরপর থেকেই রফি আর স্বাভাবিক নয়। দিনের বেলা ঘরেই থাকে, কিন্তু রাত হলেই চলে যায় শ্মশানঘাটে—একাই খেলে চলে হাডুডু।তাজপুরের মানুষ এই গল্পটি হয়তো জানেনা, তবে বহুদিন ধরে একটি ছেলে পাগল হয়ে সারাদিন ঘরে বসে থাকে আর রাতের খবর কেউ জানেনা।