চাটমোহর উপজেলার হরিপুরের চৌধুরী জমিদার বাড়ি তথা সাহিত্যিক প্রমথ চৌধুরীর সাথে কলকাতার বিখ্যাত জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বাড়ির কি সম্পর্ক?
চলুন ঘুড়ে আসি চাটমোহর উপজেলার, হরিপুরের বিখ্যাত চৌধুরী জমিদার বাড়ি থেকে। দেখে আসি হরিপুরের চৌধুরী বাড়ির সাথে কলকাতার বিখ্যাত জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বাড়ির কি সম্পর্ক? কেনই বা শ্রীমতী মগ্নময়ী দেবী ব্রিটিশ রানীর নিকট থেকে পেয়েছিলেন রত্নগর্ভা উপাধি। কেন হরিপুরের চৌধুরী বাড়িকে সমাজচ্যুত করা হয়েছিল?প্রমথ চৌধুরী, এম.এ., বার-এট-লজন্ম: ৭ আগস্ট, ১৮৬৮, যশোর। যশোর ছিল তার বাবার কর্মলস্থল। যশোরে তিনি প্রথম ৫ বছর অবসস্থান করেন।মৃত্যু: ২ সেপ্টেম্বর, ১৯৪৬, কলকাতা, ভারত।বাংলা সাহিত্যে অবদানঃ তিনি বাংলা গদ্যে চলিতরীতির প্রবর্তক; এছাড়া বাংলা সাহিত্যে প্রথম বিদ্রূপাত্মক প্রবন্ধ রচনা করেন। সবুজপত্র পত্রিকা সম্পাদনার মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যে চলিতরীতি প্রবর্তন করেন।ছদ্মনামঃ বীরবলপিতাঃ ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট দুর্গা দাশ চৌধুরী। তিনি ছিলেন পাবনার হরিপুরের জমিদার পরিবারের সন্তান। আর পাবনা শহর সহ চাটমোহরে ছড়ানো ছিল পরিবারটির বিপুল বিষয় সম্পত্তি।মাতাঃ শ্রীমতী মগ্নময়ী দেবী। তার জন্ম বাগ কাশীনাথপুরের বিখ্যাত রায় বংশে।শ্রীমতী মগ্নময়ী দেবী ছিলেন পাবনার পূর্বদক্ষিণের আত্রাই নদী পাড়ের প্রাচীন জনপদ ছাতকের জমিদার, বাংলার বারো ভুইঁয়াদের (প্রাচীন কালে ১২ সংখ্যা দিয়ে অনেক বুঝানো হতো) অন্যতম রাজা বসন্ত রায়ের বংশধর। পরবর্তীতে তারা কাশীনাথপুরে চলে আসেন।পিতামহ(দাদা/ঠাকুরদাদা)ঃকালিকান্ত চৌধুরী। তিনি নাটোরের রাজার দেওয়ান ছিলেন।স্ত্রীঃ ইন্দিরা দেবী চৌধুরাণী (১৮৭৩-১৯৬০) সঙ্গীতশিল্পী, লেখক ও অনুবাদক। ঠাকুরবাড়ির মেয়েদের মধ্যে তিনিই প্রথম বি.এ. পাশ করেন।ইন্দিরা দেবী চৌধুরাণী রবীন্দ্রনাথের বড় ভাই সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জ্ঞানদানন্দিনী দেবীর মেয়ে। ২৯ ডিসেম্বর, ১৮৭৩ সালে ইন্দিরা দেবীর জন্ম হয়।সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর (১ জুন, ১৮৪২ - ৯ জানুয়ারি, ১৯২৩) ছিলেন বাঙালি লেখক, সংগীতস্রষ্টা ও ভাষাবিদ। তিনি ছিলেন ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিসে যোগদানকারী প্রথম ভারতীয়। তাঁর মাতা জ্ঞানদানন্দিনীও ছিলেন একজন ব্যতিক্রমী, বিদুষী ও প্রগতিশীল মহিলা।ভাইবোনঃ প্রমথ চৌধুরীর ৬ ভাই এবং দুই বোন।১। বিচারপতি আশুতোষ চৌধুরী, এম.এ., বি.এ., এল.এল.এম.। তিনি ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারক। তিনি আইন-শাস্ত্র পড়তে বিলাত যাওয়ার পথে জাহাজে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাথে পরিচয় হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মাদ্রাজ পর্যন্ত গিয়ে ফিরে আসেন। এই অল্প কয়েকদিনের পরিচয় পরবর্তীতে বন্ধুত্বে রুপ নেয়। বিচারপতি আশুতোষ চৌধুরীর মাধ্যমেই জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বাড়ির সাথে সম্পর্কের শুরু। এই পরিচয়ের সুত্র ধরেই তিনি রবীন্দ্রনাথের ভাতিজী প্রতিভা দেবী চৌধুরাণীর (রবী ঠাকুরের ভাই হেমন্ত নাথের মেয়ে) সংগে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।২। ব্যারিস্টার জোগেশ চৌধুরী, বি.এ., এম.এ., বার-এট-ল। সম্পাদক উইকলি নোটস, কলকাতা। A BRIEF HISTORY OF HARIPUR এর লেখক।৩। ব্যারিস্টার কুমুদনাথ চৌধুরী, এম.এ., বার-এট-ল ( তিনি শিকারী ছিলেন। সুন্দরবনে শিকারে গিয়ে বাঘের আক্রমণে মৃত্যু হয়। শিকার বিষয়ক বই Sport in jheel and jungle এর লেখক)৪। মেজর মন্মথনাথ চৌধুরী, আই.এম.এস.। তিনি গ্যান্টর (মাদ্রাজ) এর সিভিল সার্জন ছিলেন। তিনি রবীন্দ্রনাথের ভাতিজী লীলা দেবীকে বিবাহ করেন। মন্মথনাথ চৌধুরীর কন্যা দেবিকা রানী ভারতীয় সিনেমার প্রথম অভিনেত্রী।৫। ডা. সুহৃদনাথ চৌধুরী, এল.আর.সি.পি., এম.আর.সি.এস., ফিজিসিয়ান এবং সার্জন। কলকাতার ভবানীপুরে প্র্যাক্টিস করতেন।৬। অমিয়নাথ চৌধুরী, বি.এ., বার-এট-ল।দুই বোনঃ১। কবি প্রসন্নময়ী দেবী(বাংলা সাহিত্যে প্রথম সনেটের প্রবর্তক। তার মেয়ে কবি প্রিয়ংবদা দেবী)২। মৃণালিনী দেবী।দুই বোনও বিলাত থেকে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করেন। সে সময় একটা কুসংস্কার ছিল যে, বিলাত গেলে জাত যাবে। চৌধুরী পরিবারের প্রায় সবাই উচ্চশিক্ষার জন্য বিলেত যাওয়ায় তাদের সমাজচ্যুত করা হয়েছিল।জেনারেল জেএন (জয়ন্ত নাথ) চৌধুরীঃপিতাঃ ডা. অমিয়নাথ চৌধুরী (বিলাত ফেরত চিকিৎসক)মাতাঃ প্রমিলা দেবী( ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেসের প্রথম প্রেসিডেন্ট উমেশচন্দ্র ব্যানার্জির মেয়ে)চাচাঃ প্রমথ চৌধুরী(১০ জুন ১৯০৮- ৬ এপ্রিল ১৯৮৩)ইন্ডিয়ান সেনাবাহিনীর চার তারকা বিশিষ্ট জেনারেল। ব্রিটিশ রাজ কতৃক অর্ডার অব দ্যা ব্রিটিশ এম্পায়ার (ওবিই) উপাদিতে ভূষিত হন। ২০ নভেম্বর ১৯৬২ – ৭ জুন ১৯৬৬ পর্যন্ত ইন্ডিয়ান সেনাপ্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। সেনাবাহিনী থেকে অবসরের পর ১৯৬৬ সালে কানাডায় রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পান।হরিপুরের জমিদার চৌধুরী পরিবারের সাথে কলকাতার বিখ্যাত জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারের সম্পর্কঃপ্রমথ নাথের বড় ভাই বিচারপতি আশুতোষ চৌধুরী বিয়ে করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাই হেমন্ত নাথের মেয়ে প্রতিভা দেবী চৌধুরাণী কে।প্রমথ চৌধুরী বিয়ে করেন ঠাকুরবাড়ির, রবীন্দ্রনাথের বড় ভাই সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের মেয়ে ইন্দিরা দেবী চৌধুরাণী কে।প্রমথ নাথের আরেক ভাই মেজর মন্মথনাথ চৌধুরীও বিয়ে করেন ঠাকুর বাড়ির মেয়ে লীলা দেবীকে। লীলা দেবী চৌধুরীর মাতামহী সৌদামিনী দেবী (গঙ্গোপাধ্যায়) ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বড়দিদি। মন্মথনাথ চৌধুরীর কণ্যা দেবিকা রাণী চৌধুরী (৩০ মার্চ ১৯০৮ – ৯ মার্চ ১৯৯৪), যিনি সচরাচর দেবিকা রাণী নামে পরিচিত, বিংশ শতাব্দীর ত্রিশের দশক হতে চল্লিশের দশক পর্যন্ত ভারতীয় চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তিনি \"ফার্স্ট লেডি অফ ইন্ডিয়ান স্ক্রিন \"( ভারতীয় চলচ্চিত্রের প্রথম অভিনেত্রী) খ্যাত অভিনেত্রী ছিলেন।
চাটমোহর উপজেলার হরিপুরের চৌধুরী জমিদার বাড়ি তথা সাহিত্যিক প্রমথ চৌধুরীর সাথে কলকাতার বিখ্যাত জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বাড়ির কি সম্পর্ক?
চলুন ঘুড়ে আসি চাটমোহর উপজেলার, হরিপুরের বিখ্যাত চৌধুরী জমিদার বাড়ি থেকে। দেখে আসি হরিপুরের চৌধুরী বাড়ির সাথে কলকাতার বিখ্যাত জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বাড়ির কি সম্পর্ক? কেনই বা শ্রীমতী মগ্নময়ী দেবী ব্রিটিশ রানীর নিকট থেকে পেয়েছিলেন রত্নগর্ভা উপাধি। কেন হরিপুরের চৌধুরী বাড়িকে সমাজচ্যুত করা হয়েছিল?
0 Comments