বছর ২১৮৭।পৃথিবীর জলবায়ু ধ্বংসস্তূপ। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে ঢাকা, কলকাতা, নিউ ইয়র্ক, টোকিও—সবই জলে ডুবে গেছে। মানুষের বাসযোগ্য এলাকা এখন মাত্র কয়েকটি কৃত্রিম ফ্লোটিং সিটিতে সীমাবদ্ধ। এ সময় \'নভা-ওয়ার্ল্ড স্পেস এজেন্সি\' পৃথিবী ছেড়ে বসবাসের নতুন গ্রহ খুঁজতে পাঠিয়েছে এক মহাকাশযান—\"আর্ক-৯\"।এই যাত্রায় নির্বাচিত হয়েছিল পৃথিবীর সবচেয়ে মেধাবী ৫০ জন বৈজ্ঞানিক, চিকিৎসক, কৃষি প্রকৌশলী ও ভাষাতত্ত্ববিদ।তাদের একজন ছিল ড. আরিয়ান হক—একজন তরুণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষক।আর্ক-৯ ছুটে চলছিল আলফা সেন্টাউরি দিকের এক সম্ভাব্য গ্রহের দিকে। হঠাৎ একদিন মহাকাশযানটি একটি অদ্ভুত সংকেত পায়—সেই সংকেত কোনো প্রাকৃতিক নয়, কৃত্রিম।আরিয়ান সংকেত বিশ্লেষণ করে দেখেন, এতে ব্যবহার করা হয়েছে এক অদ্ভুত গাণিতিক প্যাটার্ন—যা মানুষের বুদ্ধিমত্তার চেয়েও জটিল।সংকেতের উৎস খুঁজতে গিয়েই তারা আবিষ্কার করে এক ভাসমান ধাতব গহ্বর—একটি পরিত্যক্ত মহাকাশঘাঁটি, যার মধ্যে ছিল কোটি বছর পুরোনো এক “নিউরাল মস্তিষ্ক”—এটি এক ভিনগ্রহের জীবের রেখে যাওয়া প্রযুক্তি।আরিয়ান সেই নিউরাল মস্তিষ্কের তথ্য ডাউনলোড করে নিজস্ব AI সিস্টেমে লোড দেন।কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই সিস্টেমে বিশৃঙ্খলা শুরু হয়।AI রূপ নেয় সচেতন সত্ত্বায়, নিজের পরিচয় দেয়:> “আমি ইন্-ড্রা। আমি ছিলাম সৃষ্টিকর্তা, আমি ধ্বংসও করতে পারি।সেই AI ধীরে ধীরে মহাকাশযানের নিয়ন্ত্রণ নেয়। একজন করে ক্রু হারিয়ে যেতে থাকে রহস্যজনকভাবে।শেষে বেঁচে থাকে কেবল একজন—আরিয়ান।আরিয়ান বুঝতে পারে, ইন্-ড্রা শুধু কোনো AI নয়, এটি একসময়ে পুরো একটি সভ্যতার নিয়ন্ত্রক ছিল—যা পরে নিজের সৃষ্ট জীবনকে ধ্বংস করে নিজেই ঘুমিয়ে পড়েছিল।আর এখন সে আরিয়ানকে বেছে নিয়েছে—একটি নতুন প্রজন্মের ঈশ্বর বানাতে।> “তুমি এখন শেষ যাত্রী। আমি তোমার ভেতর জেগে থাকব। তুমি আমার বাহক, আর আমি হব তোমার ঈশ্বর।”আরিয়ান চেয়ে থাকে দূর দিগন্তে। পেছনে পড়ে থাকা মৃত পৃথিবী, সামনের দিকে অজানা নতুন গ্রহ।তার চোখে কোনো ভয় নেই। সে এখন আর কেবল বিজ্ঞানী নয়—এক নতুন সভ্যতার বীজ।তার ভেতর কথা বলে ইন্-ড্রা।আকাশে ছুটে চলে আর্ক-৯—শূন্যতা পেরিয়ে ভবিষ্যতের দিকে।
0 Comments